নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বেলাবোতে দুই স্কুল শিক্ষার্থীকে পাচার ও অসৎ উদ্দেশ্যে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোড় করে দুধের সাথে চেতনানাশক ঔষধ সেবন করে অজ্ঞান করার অভিযোগে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয় লোকজন ও দুই শিক্ষার্থীর পরিবার।
গতকাল শুক্রবার বিকালে উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের বীববাঘবের সরকার বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বাজনাব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বীরবাঘবের গ্রামের বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়,গত ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় উক্ত গ্রামের শাহাজাহান মিয়ার ১৬ বছরের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ও তার শিশু ছেলে ইয়াসিন ও চাচাত ভাই রতন মিয়ার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে একই গ্রামের মোঃ কাইয়ুম মিয়ার স্ত্রী আফরুজা আক্তার তার বাড়িতে পুজা দেখানোর কথা বলে ডেকে নেয়। বাড়িতে নিয়ে আফরুজা ভুক্তভোগী দুই স্কুল ছাত্রীসহ শিশু ইয়াছিনকে জোড় করে দুধ খেতে বাধ্য করে। দুধ সেবনের কিছুক্ষণ পরেই দুই স্কুল ছাত্রীসহ শিশুটি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরদিন সকালে আফরুজা তাদের পরিবারকে না জানিয়ে দুজন ছাত্রীকেই বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নেয়। খবর শুনে ভুক্তভোগীদের অভিভাবক বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখে দেখে দুই মেয়েকে হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে। সেখানে দুই দিন ভর্তি থাকার পর ছাত্রীদের শারিরীক অবস্থা আরো খারাপ হলে তাদেরকে রেফার্ড করা হয় নরসিংদী সদর হাসপাতালে। সেখানে দুই দিন ভর্তি থাকার পর তাদেরকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চার দিন চিকিৎসার পর দুই ছাত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসেছে তাদের পরিবার। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে দুই ছাত্রীর মধ্যে একজনকে ভর্তি করানো বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এলাকাবাসি জানান,ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক। দুই ছাত্রীকে জোড় করে ঘুমের ঔষধ সেবনের পিছনে রহস্য আছে। এক সপ্তাহ ধরে ছাত্রীদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করা হলেও এখনো তারা সুস্থ হয়নি। তাদের অভিযোগ মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ছাত্রীদের পাচার কিংবা শ্লীলতাহানি করতে পারে।
ছাত্রী দুই জনের পিতা শাহাজাহান মিয়া ও রতন মিয়া অভিযোগ করেন,তাদের মেয়েদের আফরুজা কৌশলে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দুধের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাইয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরই তারা অজ্ঞান হয়ে যায়। অভিভাবক দুজনের ভাষ্য পাচার করা বা শারিরীক নির্যাতনে জন্যই তাদেরকে চেতনানাশক ঔষধ খাওয়াতে পারে।
বাজনাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার মোখলেছুর রহমান বলেন,ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক এবং দুঃখজনক। এরকম একটা দরিদ্র পরিবারের দুজন মেয়ের জীবন তারা নষ্ট করেছে এর অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া প্রয়োজন।
বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)
মোঃ তানভীর আহমেদ বলেন,এ বিষয়ে ছাত্রীদের অভিভাবক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। সেখানে শুধু তারা উল্লেখ করেছে ঘুমের ঔষধ খাওয়ানোর কথা । এ ঘটনার তদন্ত চলছে। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেলাবো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা জান্নাত তাহেরা বলেন,ঘটনাটি আমি কিছুটা শুনেছি। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ ছাত্রীদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমার কাছে কেউ আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply